ভাল লেখক হতে হলে আপনাকে যে সাতটি টিপস মানতে হবে

 

ভালো লিখতে হলে আপনাকে যে সাতটি  টিপস মানতে হবে

লেখালেখিআপনি হয়তো প্রতিদিনই করেনকিন্তু আপনি কি নিজের লেখা গদ্যটিতে সবার সামনে একটু আলাদা করে তুলে ধরতে চান?

এটার কোন গ্যারান্টি নেই যে আপনি পরবর্তী ম্যান বুকার বা পুলিৎজার পুরষ্কার পেতে যাচ্ছেনকিংবা পরবর্তী চিমামান্ডা নগোজি অ্যাডিচে বা এমিলি ব্রন্টি হতে যাচ্ছেন

কিন্তু আপনি যদি একজন ভাল লেখক হতে চানতাহলে আপনাকে কিছু নির্দেশনা মানতেই হবে

দ্য ইকনোমিস্ট সাময়িকীর ভাষা গুরু হিসেবে পরিচিত লেন গ্রিনযিনি সাবেক আর্টস সম্পাদক এবং কলামিস্টতিনি ভাল লেখক হওয়ার সাতটি টিপস দিয়েছেন

উচ্চাকাঙ্ক্ষা নিয়ে শুরু করুন

আপনি যে বিষয়ে যুক্তি দিতে চান বা যে বিষয়টি নিয়ে গল্পটি বলতে চান তার মোদ্দা কথাটি আপাতত ভুলে যান

শুরু করুন কোন একটি বর্ণনা বা উদাহরণ দিয়ে যা পাঠককে আপনার লেখা পড়তে সঠিক মেজাজটি এনে দেবে

"অনেক বছর পরযখন তাকে ফায়ারিং স্কোয়াডের মুখে পড়তে হলো...." এভাবে নিজের বিখ্যাত রচনা 'ওয়ান হান্ড্রেড ইয়ারস অব সলিটিউডবা 'নিঃসঙ্গতার একশ বছরশুরু করেছিলেন লেখক গ্র্যাব্রিয়েল গার্সিয়া মার্কেজ

 


বাক্য সংক্ষিপ্ত রাখুন

সংক্ষিপ্ত বাক্যে লিখলে তা আসলে পাঠকের মেধাকে ছোট করা বোঝায় না

তবে এটা করাটা অতটা সোজাও নয় কিন্তু এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ

এটা কোন স্টাইল নয়কিন্তু মানুষের জৈবিক বৈশিষ্ট্য মাত্রকারণ এভাবেই আমাদের মস্তিষ্ক কাজ করে

দীর্ঘ একটি বাক্যবিশেষ করে যেসব বাক্যে একাধিক অধীনস্থ বাক্যাংশ থাকেসে ধরণের বাক্য বুঝতে হলে পাঠককে ব্যাকরণের পাশাপাশি মূল বিষয়টিকে মাথায় একসাথে রাখতে হয়

যা অনেক বেশি কঠিন এবং পাঠককে আপনার লেখার ব্যাকরণ নিয়ে ব্যস্ত রাখারও কোন মানে হয় না

এর চেয়ে বরং লেখার মূল আধেয় বা বিষয় বস্তুর উপরই গুরুত্ব দেয়া উচিত

 

একই সাথেবিভিন্ন দৈর্ঘ্যের বাক্যও লিখতে হবে

আপনি হয়তো শুনে থাকবেন: "সব কিছুরই পরিমিতি বোধ থাকা উচিতএমনকি পরিমিতিরও পরিমিতি বোধ থাকা জরুরী"

যেখানে ছোট ছোট বাক্যে লেখাটাই সবচেয়ে বেশি ব্যবহার করা উচিততবে সব বাক্যই যদি ছোট লেখা হয় এবং আর কোন ধরণের বাক্য যদি না থাকে তাহলে তা আপনার লেখায় এক ধরণের কাটা কাটা ভাব অর্থাৎ রসহীন করে তুলবে

এক ধরণের ্যাট-টাট-টাট অনুভূতি দিবে পাঠককে যা হয়তো আপনি বাস্তবে দিতে চাননি এবং এটা পাঠকের জন্য বিরক্তির কারণও হতে পারে

তাই সব ধরণের বাক্যই লিখতে হবে


সঠিক শব্দ ব্যবহার করুন

সঠিক শব্দের ব্যবহার পাঠককে দেখাগন্ধ নেয়াস্বাদ নেয়া কিংবা পায়ের আঙুল দিয়ে স্পর্শ করার মতো অনুভূতি দেয়

এটা পাঠককে এমন কিছু দেয় যা দিয়ে তারা তাদের মনের চোখ দিয়ে এক ধরণের ছবি আঁকে

এই ছবি এবং শব্দ মিলেআপনার বার্তাকে স্মরণীয় এবং আকর্ষণীয় করে তুলবে পাঠকের কাছে

 


বিমূর্ত শব্দ এড়িয়ে চলুন

 ....বিশেষ করে এগুলোকে মাঝে মাঝে বলা হয়ে থাকে "মনোনীত করণবা আরো ভাল ভাবে বললে- "জম্বি নাউন বা ভৌতিক বিশেষ্যবলা যায়

এগুলো অনেক বেশি প্রাণহীন শব্দ যেমন "ঘটনা", "ফেনোমেনা", "স্তরবা "পর্যবেক্ষণ"

ফেনোমেনা শুনতে আসলে কেমন শোনায়পর্যবেক্ষণকে কিভাবে অনুভব করা যায়?

প্রাতিষ্ঠানিকআমলাতান্ত্রিক এবং অন্যান্য প্রাচীন লেখার ধরণে এমন শব্দের প্রাচুর্য থাকে

এর পরিবর্তে স্পষ্টভাবে কল্পনা করা যায় এবং নির্দিষ্টভাবে বিষয় বস্তুকে তুলে ধরে এমন শব্দ বাছাই করা উচিত

নিজের লেখাটি জোরে জোরে পড়ুন

শুধু নিজে নিজে লেখাপুনরায় লেখা এবং সম্পাদনাই যথেষ্ট নয়বরং জোরে জোরে পড়ুন

যখন আপনি পড়বেন তখন আপনি বুঝতে পারবেন যেলেখার সময় আসলে আপনি কোন ধরণের শব্দটি ভুলে গেছেন বা মিস করেছেন

যদি এটা বলতে কষ্ট হয়তাহলে এটা পড়তেও কষ্ট হবে

এছাড়া কোথায় ছন্দপতন হয়েছে সেটিও আপনি সহজেই ধরে ফেলতে পারবেন

 

দৃঢ় ভাবে শেষ করুন

শেষের জন্য আপনার জানা সবচেয়ে শক্তিশালী শব্দ বা বাক্য গুচ্ছ ব্যবহার করুন

আপনি কি ধরণের শব্দ বাছাই করছেন সেদিকে খেয়াল রাখুন এমনকি শক্তিশালীবা জোর রয়েছে এমন সিলেবল দিয়ে শেষ করার চেষ্টা করুন

শেষের শব্দগুলোই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ

এটা আমাদের কথা শুনে বিশ্বাস না করলেও আইরিন নেমিরভস্কির কথা তো নিশ্চয়ই এড়িয়ে যেতে পারবেন না

নিজের রচনা স্যুট ফ্রেঞ্চাইজিতে তিনিও একই কথা বলেছেন


আজ আগামী ফিচার/এনএ

 

 

 

x

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ