শীলা প্রামাণিক
আমাদের কি কিছুই করার ছিল না?
আমাদের অভিমান আর অভিযোগগুলোকে
এক কৌটায় বন্দি করে বলতে পারতাম
চলো, দুজনে না হয় গলাগলি ধরে কাঁদি।
আমাদের ব্যথাগুলোকে বাতাসের গায়ে মিলিয়ে দিয়ে
বলতে পারতাম চলো একটু আনন্দে মাতি!
দুঃখগুলোকে নর্দমায় ছুঁড়ে দিয়ে
বলতে পারতাম চলো, নীলিমায় হারাই।
আমাদের ব্যথিত স্মৃতিগুলো পায়ে মাড়িয়ে বলতে পারতাম
চলো না হয় মায়ায় জড়াই।
আমাদের অনন্ত না—পাওয়াকে নিমেষেই উড়িয়ে দিয়ে বলতে পারতামÑ
চলো, সুখের ফোয়ারায় হাসি।
বিরহের কারণগুলোকে বিদ্রুপ করে বলতে পারতামÑ
চলো খুব করে জ্যোৎস্নায় ভাসি।
আমাদের কি কিছুই করার ছিল না?
যন্ত্রণার প্রহরগুলোকে ভাগাভাগি করে বলতে পারতাম,
চলো , নিঃস্ব হই কোলাহলহীন মৌনতায়।
দৈনন্দিন দ্বন্দ্বগুলোকে সন্ধিতে রূপান্তরিত করে
বলতে পারতাম চলো, সব ভুলে মিলে যাই একাত্মতায়।
আমাদের অশান্তিগুলোকে শান্তিতে রূপ দিয়ে
বলতে পারতাম চলো হাতে হাত রেখে হাঁটি।
জীবনের উত্তাপগুলোকে পরম আলিঙ্গনে ছুঁয়ে দিয়ে
বলতে পারতাম চলো, না—হয় পুড়ে হই খাঁটি।
আমাদের কি কিছুই করার ছিল না?
আমাদের বালিয়াড়ি অভিমানের ঝড়গুলোকে
এক ফুৎকারে উড়িয়ে দিয়ে বলতে পারতাম
চলো প্রেমের বন্যায় ডুব দিই।
বিপন্ন বিষণ্ণ মুহূর্তগুলোকে বিকেলের আলোয় বিলিয়ে দিয়ে
বলতে পারতাম চলো, আমরা আজ শুধু ভালোবাসা কুড়িয়ে নিই।
আমাদের কষ্টের অনুভূতিগুলোকে তুড়ি মেরে বলতে পারতাম
তুমি আমার সকল অনুভব।
অপেক্ষা ও উপেক্ষার মুহূর্তগুলোকে জলাঞ্জলি দিয়ে
দ্বিধাহীন হাত বাড়িয়ে বলতে পারতাম
তুমিÑতুমিÑতুমিই আমার...সব।
আমরা কিছুই করতে পারিনি।
আমরা শুধু অভিমান আর অবিশ্বাস বুকে চেপে
দুজন দুজনের পথে চলেছি একাকী বিবর্ণ শূন্যতায়।
1 মন্তব্যসমূহ
চলো, সব ভুলে মিলে যাই একাত্মতায়.…সত্যি দারুণ। শুভেচ্ছা কবি।
উত্তরমুছুন